কুমিল্লা জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগার ১৯৮২ সালে কুমিল্লায় প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রথমে ভাড়া করা বাসায় চলে, পরে ২০০৮ সালে নতুন ভবনটি নির্মিত হয়। জেলা গণগ্রন্থাগারটি বাংলাদেশ সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন। এই গ্রন্থাগারটিতে প্রায় ৫১ হাজার বিভিন্ন প্রকারের বই রয়েছে।
এ গ্রন্থাগারের লোকবল ৯ জন থাকার কথা থাকলেও আছেন মাত্র চারজন। এর ফলে লোকবল সংকটের কারণে সেবা পেতে বেগ পেতে হচ্ছে। ২০০৮ সাল থেকেই পাঁচজন কম জনবল নিয়ে জেলা সরকারি গ্রন্থাগারটির কার্যক্রম চলছে।
সরেজমিনে নগরের ছোটরায় অবস্থিত জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগারে গিয়ে দেখা যায় যে রিডিং রুমে ৩৭ জন পাঠক বই পড়ছেন। তখন জেলা সরকারি গ্রন্থাগারের সহকারী লাইব্রেরিয়ান মো. নাফিস সাদিক শিশির জানান, প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার গণগ্রন্থাগারটি বন্ধ থাকে। শনিবার খোলা থাকার কারণ হচ্ছে সরকারি চাকুরিজীবীরা যেন লাইব্রেরিতে এসে পড়তে পারেন। লোকবল সংকট ছাড়াও এখানে বিভিন্ন সংকট আছে। এরপরও ২০২৩ সালে কুমিল্লা জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগার সারাদেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ গ্রন্থাগারের উপাধি জিতেছে। গ্রন্থাগারের প্রবেশ মুখে আমাদের একটি উন্মুক্ত মঞ্চ করা হয়েছে। সেখানে পাঠকরা পড়াশোনা করতে পারবে এবং প্রয়োজনীয় কথাবার্তা বলতে পারবে।
জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগারের বুক বাইন্ডার ও দেখাশোনার কাজে নিয়োজিত মো. ফারুক আহম্মদ ও মো. সুমন মিয়া জানান, এ গ্রন্থাগারে বুকশেলফ রয়েছে ৫২টি এবং প্রতিটি সেলফে তাক রয়েছে ছয়টি। মুক্তিযুদ্ধের একটি কর্নার রয়েছে, তাতে ৩৫০টি বই আছে। শিশুদের জন্য আলাদা কক্ষ ও কর্নার রয়েছে এবং সেখানে কিডস জোনও রয়েছে। রয়েছে কাজী নজরুল ইসলাম কর্নার, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কর্নার, ধর্মীয় কর্নার এবং বিভিন্ন ধরনের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যবইয়ের সমাহার। হুমায়ুন আহমেদ ও জাফর ইকবাল কর্নারে প্রায় ৩৫০টি বই রয়েছে।
গত এক মাসে জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগারে পাঠক সংখ্যা ছিল ২৪৯২ জন, এর মধ্যে পুরুষ পাঠক ছিলেন ১৭৭১ জন, নারী পাঠক ছিলেন ৫২৮ জন এবং শিশু পাঠক ছিল ১৯৩ জন। গত জানুয়ারি মাসে মোট পাঠক সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৪৯২ জন।
কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও শিক্ষাবিদ জহিরুল হক দুলাল বলেন, অবস্থানগত কারণে জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগারটিকে অনেকে চিনে না। এখানে বেশির ভাগ সময় যে সরকার থাকে, ওই সরকারের প্রধানদের নিয়ে বেশি বই থাকে। এরপরও গণগ্রন্থাগারটিতে অনেক সুযোগ-সুবিধা আছে পাঠকদের জন্য। তবে এখানে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র নেই, এটা একটি বড় অসুবিধা।


