দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় অবিরাম বোমা হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। দখলদার দেশটির হামলায় প্রতিনিয়ত ঝরছে নতুন নতুন প্রাণ। একের পর এক হামলায় গাজাবাসীর প্রতি মুহূর্ত কাটছে আতঙ্কে। প্রতিদিন মৃত্যুর আশঙ্কা নিয়ে জীবন কাটানো এক নারী তার হৃদয়বিদারক অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরছেন। শত্রু সেনাবাহিনী যখন তাদের গৃহদ্বারে প্রবেশ করছে এবং অবিরাম বোমাবর্ষণের ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে দিন কাটাচ্ছেন, তখন এই নারী তার জীবনের গল্প সবার কাছে পৌঁছে দিতে চান।
‘আমি একটি সংখ্যা নই’ কথা বলে ওই নারী তাদের জন্য দোয়া করেন, যারা গাজার আরেকটি অজানা শহীদ হওয়ার আগে তার গল্প শুনবেন।
নিজের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে ওই নারী বলেন, ‘মৃত্যু যে এত কাছে চলে আসবে, তা কখনো ভাবিনি। আমি একসময় বলতাম, মৃত্যু হঠাৎ আসে, আমরা সেটি অনুভব করি না। কিন্তু এই যুদ্ধে আমাদেরকে সবকিছু অনুভব করানো হয়েছে…ধীরে ধীরে। আমরা এর আগে ক্ষতি সহ্য করি, যেমন আপনি আপনার বাড়ি বোমা বিস্ফোরণে ধ্বংস হওয়ার আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন।
এখনও হয়তো আমার বাড়ি অক্ষত আছে, তবে সেই ভয় এখনো আমাদের মধ্যে রয়ে গেছে। এই ভয় আমার হৃদয়কে এতটাই ক্লান্ত করে দিয়েছে যে, এখন আর কিছুই সহ্য করতে পারি না।
যুদ্ধের শুরু থেকেই আমি সংগ্রাম করছি, যখনই ইসরায়েলি সেনা আমাদের কাছাকাছি চলে এসেছে। মনে পড়ছে সেই মুহূর্তটি, যখন ট্যাংকগুলো নেটজারিম এলাকা থেকে গাজায় প্রবেশ করেছিল, আমি অবাক হয়ে আমার সব বন্ধুদের কাছে একটা বার্তা পাঠিয়েছিলাম: ‘এরা গাজায় কীভাবে প্রবেশ করল? আমি কি স্বপ্ন দেখছি?!”
গাজার ওই নারী বলেন, ‘আমি তাদের প্রত্যাহারের অপেক্ষা করছিলাম, যাতে গাজা আবার আমাদের মতো মুক্ত হয়ে যায়, যেমনটা আমরা সবসময় জানতাম। এখন তারা আমাদের কাছে এত কাছাকাছি, আল-ফুখারি এলাকায়, খান ইউনিসের পূর্ব এবং রাফাহের উত্তর অঞ্চলে। এটি খান ইউনিসের শেষ এবং রাফাহর শুরু হওয়ার স্থান। তারা এতো কাছাকাছি, প্রতিটি মুহূর্তে ভীষণ বিস্ফোরণের শব্দ শোনাচ্ছে, আমাদের সেই অবিরাম শব্দগুলো সহ্য করতে বাধ্য করছে। এই যুদ্ধ অন্য সব যুদ্ধের থেকে ভিন্ন, অনেক ভিন্ন। আমার গল্প মনে রাখুন। আমি একটি সংখ্যা হতে চাই না।


