নন্দী টিভি ডেস্ক:নিরাপত্তা বাহিনীকে সংস্কার করে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করা বাংলাদেশের জন্য অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) নিউইয়র্কভিত্তিক সংগঠনটি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
প্রতিবেদনটির শিরোনাম ছিল ‘আফটার দ্য মুনসুন রেভুলেশন: এ রোডম্যাপ টু লাস্টিং সিকিউরিটি সেক্টর রিফর্ম ইন বাংলাদেশ’। এতে বলা হয়েছে, জুলাই মাসের অভ্যুত্থানের সময় দেশে নজিরবিহীন মাত্রায় দমন–পীড়ন চালানো হয়েছিল। এ ধরনের অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর একটি সুপ্রতিষ্ঠিত অনুশীলনে পরিণত হয়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, দীর্ঘদিন ধরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দায়মুক্তির সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত। ২০১৯ সালে জাতিসংঘের নির্যাতনবিরোধী কমিটি (সিএটি) বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনীকে ‘রাষ্ট্রের ভেতরে রাষ্ট্র’ হিসেবে বর্ণনা করেছিল।
জুলাইয়ের অভ্যুত্থানের পর পরিস্থিতি এতটাই অস্থিতিশীল হয়েছিল যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর বেশ কিছু থানা বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশের অনেক সদস্য প্রতিশোধের ভয়ে আত্মগোপনে চলে যান। যদিও আগস্টের মাঝামাঝিতে ৬৩৯ থানার মধ্যে ৬২৮টি পুনরায় কার্যক্রম শুরু করে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ইতোমধ্যে নিরাপত্তা খাতের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। গুমের ঘটনা তদন্তে কমিশন গঠনসহ পুলিশের সংস্কারেও আলাদা কমিশন গঠন করা হয়েছে। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে, অতীতে যে ধরনের ক্ষমতার অপব্যবহার করা হয়েছিল, তা যেন আর কখনো না ঘটে।
এছাড়া সরকারি আইনজীবী ও বিচার বিভাগকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করা, নাগরিক সমাজের ওপর নজরদারি বন্ধ করা এবং কাঠামোগত সংস্কার নিশ্চিত করার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়েছে, দাতা দেশগুলোকে সংস্কার প্রক্রিয়ায় বিনিয়োগ করা উচিত। পাশাপাশি অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের সহযোগিতা চাওয়া, যাতে ভবিষ্যৎ সরকার ক্ষমতায় এসে এসব সংস্কার পাল্টে দিতে না পারে।
[সূত্র: হিউম্যান রাইটস ওয়াচ প্রতিবেদন, ২০২৫]ক


