গত বছরের ৫ আগষ্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের দিন বিক্ষুদ্ধ ছাত্র জনতা কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগ অফিসে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর ও আসবাবপত্র লুট করে নেয়। এর পর কয়েক দফায় ৯তলা বিশিষ্ট ওই ভবনের মালামাল লুট চলে। বর্তমানে ওই ভবনের কাঠামো ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।
এবার সেই ভবনকে পাবলিক টয়লেট করার ঘোষণা দিয়েছেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুমিল্লা মহানগর শাখার নেতাকর্মীরা।
সমাবেশ শেষে আবু রায়হান বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কোন নাম নিশানা আর কুমিল্লার মানুষ আর দেখতে চায় না। তাই এ সংগঠনের অফিস আর কুমিল্লায় থাকবে না। জনগণের জন্য এ অফিস ‘পাবলিক টয়লেট’ হিসেবে আমরা আগামি সপ্তাহে তৈরী করে দিব।’ এ সময় সংগঠনের সদস্য সচিব রাশেদুল হাসানসহ অন্যান্য নেতাকমর্ীরা উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশ শেষ হওয়ার পর অফিসের সামনে খালি স্থানে সিএনজি স্ট্যান্ড হিসেবে ব্যবহার করতে সিএনজি অটোরিক্সা আনতে দেখা যায়।
আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ২১ অক্টোবর গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে নতুন মহানগর আওয়ামী লীগের অফিস হিসেবে এ ভবনের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নগরীর রামঘাট এলাকায় নান্দনিক কারুকাজ ও আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত ৯ তলা এ ভবনের উদ্যোগ, পরিকল্পনা ও তত্ত্বাবধানে ছিলেন কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও কুমিল্লা সদর আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার। বর্তমানে বাহার ও তঁার মেয়ে সিটি কপোর্রেশনের অপসারিত মেয়র ডা. তাহসিন বাহার সূচনা ভারতে অবস্থান করছেন। এছাড়াও অধিকাংশ নেতাকমর্ীও আত্মগোপনে থাকায় এ বিষয়ে দলের দায়িত্বশীল কারও বক্তব্য জানা যায়নি।
এর আগে বুধবার রাত থেকেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকমর্ীরা নগরীতে আওয়ামী লীগের দলীয় অফিস ও বাহারের বাড়িতে হামলা ভাংচুর ও আগুন ধরিয়ে দেয়। বৃহস্পতিবার সংগঠনিটির ব্যানারে বিক্ষুব্ধ ছাত্র জনতা বিকালে কুমিল্লার আদালত প্রাঙ্গন এবং নগর উদ্যানে গেটে স্থাপিত শেখ মুজিবুর রহমানের দুটি মোরাল বোলডোজার দিয়ে ভেঙে গুড়িয়ে দেয়।পরে কুমিল্লা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান লিটন ও সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম ভূঁঞার কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। এ সময় আদালত চত্বরে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যাকারী ইন্ধনদাতা ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর’ আখ্যা দিয়ে ২০ জন আইনজীবীকে আদালত অঙ্গণ থেকে বহিস্কারের দাবি জানিয়ে তাদের নাম ও ছবি সম্বলিত ব্যানার আইনজীবী সমিতির সামনে টানিয়ে দেয়া হয়।


