বগুড়ার সোনাতলার পাকুল্যা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট দ্বন্দ্বের জেরে আহত যুবদল নেতা রাশেদুল হাসান (২৭) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তার মৃত্যুতে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
রাশেদুল হাসান পাকুল্যা ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য ছিলেন। এছাড়াও তিনি জিয়া সাইবার ফোর্স বগুড়া জেলা শাখার সহ-সভাপতি ও সোনাতলা উপজেলা সাইবার ফোর্সের সভাপতির দায়িত্ব পালন করতেন। গত ৭ ফেব্রুয়ারি তিনি হামলার শিকার হন এবং শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে টানা ৭ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ১৪ ফেব্রুয়ারি বিকেলে মৃত্যুবরণ করেন।
৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় মাজেদুর রহমান জুয়েল তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশ নেন। ওই সফরে যুবদল নেতা রাশেদও ছিলেন। পরে রাশেদ মোটরসাইকেলে পাকুল্যা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল হান্নান বাটালুর নেতৃত্বাধীন কয়েকজন তাকে ধাওয়া করে। জীবন বাঁচাতে তিনি একটি বাড়িতে আশ্রয় নিলেও সেখানেই তাকে মারধর করে গুরুতর আহত করা হয়।
রুতর আহত অবস্থায় রাশেদুল হাসানকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৪ ফেব্রুয়ারি বিকেলে তিনি মারা যান। হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক হারুনার রশিদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রাশেদের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিএনপি ও যুবদলের নেতা-কর্মীরা আব্দুল হান্নান বাটালু ও তার সহযোগীদের চার-পাঁচটি বাড়িতে ভাঙচুর চালান। এর আগেই বাটালু ও তার লোকজন পালিয়ে যান।
এদিকে অভিযুক্ত আব্দুল হান্নান বাটালুর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। একইভাবে মাজেদুর রহমান জুয়েলের মোবাইল ফোনেও একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
এ বিষয়ে সোনাতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিলাদুন্নবি বলেন, ‘ম্যানেজিং কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা চলছিল। সেই জের ধরে রাশেদকে মারধর করা হয়। তার মৃত্যুর পর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পাকুল্লা বাজারে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা রয়েছে, এজন্য সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি।’
মাজেদুর রহমান জুয়েল জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ থেকে দলত্যাগ করে বিএনপিতে যোগ দেন। পরে বিএনপিতে সুবিধা না করতে পেরে আবার জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার চেষ্টারত আছেন। সোনাতলায় চলমান রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ও রাশেদুল হাসানের মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।


